অতিরিক্ত কাশি হলে কি ঔষধ খাবো-শুকনো কাশির লক্ষণ

প্রিয় পাঠক, আপনি যদি অতিরিক্ত কাশি হলে কি ওষুধ খাবো-শুকনো কাশির লক্ষণ সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হন তাহলে আমাদের আজকের এই পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আমাদের আজকের পর্বে আমরা আলোচনা করতে চলেছি অতিরিক্ত কাশি হলে কি ওষুধ খাবো-শুকনো কাশির লক্ষণ সম্পর্কে।
অতিরিক্ত কাশি হলে কি ঔষধ খাবো-শুকনো কাশির লক্ষণ
অতিরিক্ত কাশি হলে কি ওষুধ খাবো-শুকনো কাশির লক্ষণ এ বিষয়ে আলোচনা করার পাশাপাশি। আমরা আরও কাশি হলে কি খাওয়া যাবে বা কি খাওয়া যাবেনা, কাশির ঘরোয়া চিকিৎসা ও শুকনো কাশি কেন হয় এ সকল বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনি যদি যাবতীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তবে অবশ্যই আমাদের আজকের পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পোষ্ট সূচিপত্রঃ অতিরিক্ত কাশি হলে কি ঔষধ খাবো-শুকনো কাশির লক্ষণ

  • কাশির ঘরোয়া চিকিৎসা
  • কাশি হলে কোন খাবার খাওয়া যাবেনা
  • অতিরিক্ত কাশির ঔষধ
  • শুকনো কাশি কিসের লক্ষণ
  • শুকনো কাশি কেন হয়
  • শেষ কথা

কাশির ঘরোয়া চিকিৎসা

যাদের সাধারণত কাশি বা শুকনো কাশি রয়েছে তারাই একমাত্র বলতে পারবে কাশির কতটা যন্ত্রনা। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে এটি খুবই কষ্টকর। আবহাওয়া জনিত কাশি আমাদের শরীরের জন্য খুব একটা খারাপ নয় এটি প্রকৃতিক একটি স্বাভাবিক ঘটনা এটি আমাদের শ্বাসনালী পরিষ্কার করে। তবে দীর্ঘস্থায়ী কাশি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। পরিবেশের ধুলাবালি, জীবাণু বা ঠান্ডা জনিত কারণে হতে পারে। তবে শীতের মৌসুমে এটি প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। তাই আমাদের সব সময় উচিত কাশির ঘরোয়া চিকিৎসা পদ্ধতি জেনে রাখা। আপনার ঘরে বিদ্যমান সাধারণ কিছু জিনিস দিয়েই আপনি খুব সহজে আপনার দীর্ঘস্থায়ী কাশি দূর করতে পারবেন।
মধু
মধুতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও আন্টি ব্যাকটেরিয়াল বা অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য। মধু অত্যন্ত উপকারী এবং আমাদের শরীরের জন্য স্বাস্থ্যকর এটি গলা ব্যথা কমিয়ে কাশি দূর করতে সাহায্য করে। হালকা গরম পানি কিংবা চায়ের সঙ্গে কিছুটা পরিমাণ মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে দিলে দুইবার পান করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
চা
আমরা অনেকেই নিয়মিত চা খায়। তবে আপনি জেনে অবাক হবেন যে আমাদের গলার অভ্যন্তরের এন্টি ব্যাকটেরিয়াল বা এন্টি ইনফ্লামেটরি জীবাণু ধ্বংস করতে চা অত্যন্ত কার্যকরী। তবে চায়ের সঙ্গে যদি একটু লেবু হয়ে যায় তাহলে তো আর কথাই নেই। এটি আপনার গলা ব্যথা কমিয়ে কাশি দূর করতে সাহায্য করবে।
লবণ পানি
শীতের মৌসুমে গলা ব্যথা আর লবণ পানি দিয়ে গড়গড়া করবেন না তা তো হতেই পারে না। শীতের মৌসুমী আবহাওয়ায় অনেকেরই গলা ব্যথার মত দীর্ঘস্থায়ী কাশির সমস্যা দেখা দেয়। এতে আপনি যদি দিনে দুইবার লবণ পানির গড়গড়া করেন তাহলে খুব সহজেই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে প্রথমে হালকা কুসুম গরম পানিতে সামান্য পরিমাণ লবণ দিয়ে দুই থেকে তিন মিনিট ধরে গড়গড়া করুন।
আদা
অত্যন্ত ঔষধি গুন সম্পন্ন আদাতে রয়েছে কাশি দূর করার। চা কিংবা মধুর সঙ্গে সামান্য পরিমাণ আদা আপনার কাশির কষ্ট দূর করতে সক্ষম।
তুলসী পাতা
তুলসী পাতায় রয়েছে ঔষধি গুন সম্পূর্ণ বিভিন্ন উপাদান যেটি আপনার কাশি সমস্যা দূর করে।
গোলমরিচ
চায়ের সঙ্গে বা গরম পানির সঙ্গে কিছুটা গোলমরিচ নিয়ে তা পান করলে এটি আপনার কাশির সমস্যা দূর করবে।
গরম থাকুন
বিভিন্ন মৌসুমে যাদের ঠান্ডার সমস্যা রয়েছে তাদের একটুতেই কাশির সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সব সময় গরম থাকার চেষ্টা করুন। বিশেষ করে শীতের মৌসুমে নিজেকে উষ্ণ রাখুন। পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন এবং পর্যাপ্ত ঘুমান।

কাশি হলে কোন খাবার খাওয়া যাবেনা

যাদের ঠান্ডার সমস্যা রয়েছে তাদের মৌসুমী চেঞ্জ হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে থাকে। যেমন গলা ব্যথা বা কাশি বা বুকে কফ জমে যাওয়া। যাদের এ সকল সমস্যা রয়েছে তারা খাবারদাবার এবং অভ্যাসের পরিবর্তন নিয়ে আসুন। চলুন জেনে নেওয়া যাক কাশি হলে কোন খাবার খাওয়া যাবেনা সে সম্পর্কে।
ঠান্ডা খাবার
যাদের ঠান্ডা বা কাশির সমস্যা রয়েছে। তাদের কোনভাবে ঠান্ডা জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত নয়। বিশেষ করে ফ্রিজ আপ করা কোন খাবার। আইসক্রিম বা কোমল পানীয় যাদের ঠান্ডা রয়েছে তাদের মারাত্মক শত্রু বলা যেতে পারে। এটি আপনার শ্বাসনালী কে শুষ্ক করে তোলে যার ফলে ব্যথা সৃষ্টি হয় এবং কাশির পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই যত সম্ভব এগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।
ক্যাফেইন যুক্ত পানীয়
যাদের কাশির সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ক্যাভেইন যুক্ত পানি ও এড়িয়ে চলা উচিত। বিশেষ করে কাশির সময় কফি খাওয়া একদমই উচিত নয় এটি আপনার কাশির সমস্যাকে দ্বিগুণ পরিমাণে বাড়িয়ে দিতে পারে।
প্রক্রিয়াজাতকৃত খাবার
প্রক্রিয়াজাতকৃত খাবার কখনোই কাশি কিংবা সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রেও খাওয়া ঠিক নয়। এটি আপনার সুস্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব বিস্তার করে। যেমন-চিপস, পাস্তা, রুটি ইত্যাদি প্যাকেট জাতীয় খাবার আপনার কাশির সময় অবশ্যই এড়িয়ে চলুন।
অ্যালকোহল
অ্যালকোহল আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয় যার ফলে শরীরে নানা রকম রোগ দেখা দিতে পারে। যারা নিয়মিত অ্যালকোহল গ্রহণ করেন তাদের ক্ষেত্রে ফুসফুস এ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় যার ফলে কাশি একটি স্বাভাবিক ঘটনা। এটি আপনার বুকে কফ জমিয়ে দিয়ে ফুসফুস ড্যামেজের সৃষ্টি করে।
ভাজা খাবার
অতিরিক্ত তেল মসলাযুক্ত খাবার আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত অনুপযোগী। এটি আপনার শরীরে নানা রকম রোগ সৃষ্টি করে সাথে কাশির সময় এটি আপনার কাশি কে আরো বৃদ্ধি করে।

অতিরিক্ত কাশির ঔষধ

অতিরিক্ত কাশি হলে কি ওষুধ খাব এ সম্পর্কে অনেকেই জানতে আগ্রহী। কাশি বিরক্তির আরও একটি নাম। অতিরিক্ত কাশি গলা ব্যথার সমস্যা সৃষ্টি করে। অতিরিক্ত কাশির ফলে সব সময় অস্বস্তি অনুভব হয় এবং কোন কাজে ঠিকমতো মন বসে না। যারা অনেকদিন যাবত কাশি সমস্যায় ভুগছেন তারা অতিরিক্ত কাশির ঔষধ সম্পর্কে জেনে রাখুন। অতিরিক্ত কাশির ঔষধ গুলোর নাম নিচে উল্লেখ করা হলো-
  • Axodin 180 mg
  • keto A 100 mg
  • Sendo 5 mg
  • Fexo 120 mg
  • Ambrox 
  • Encilor 10 mg
  • Klarix 
  • Askorel SR 
  • Brolyt 3 mg
সর্তকতা: ঔষধ গ্রহণের পূর্বে অবশ্যই রেজিস্টার চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করুন।

শুকনো কাশি কিসের লক্ষণ

অনেকেই কাশির সমস্যায় ভুগে থাকেন। ঋতুভিত্তিক কারণে এ সমস্যা বেশি কিংবা কম হতে পারে। শীতকালে এ সমস্যাটা বেশি দেখা যায়। কাশির সাথে গলা ব্যথা তো রয়েছেই। তবে অনেকের দীর্ঘদিন যাবত শুকনো কাশির বিষয়টি লক্ষ্য করা যায়। প্রথমে জানতে হবে শুকনো কাশি কিসের লক্ষণ এর সম্পর্কে-

ফুসফুসের সংক্রমণ, যক্ষা, ধুলি বালি, দূষণ, হাঁপানি ইত্যাদি কারণে শুকনো কাশি হতে পারে। বিশেষ করে শীতকালে এবং দূষণের কারণে শুকনো কাশির সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রধানত দুই ধরনের কাশি দেখা যায় একটি হলো শুকনো কাশি এবং অন্যটি হলো কফ যুক্ত কাশি। সাধারণত কক যুক্ত কাশি ঋতুজনিত কারণে হয়ে থাকে।

শুকনো কাশি কেন হয়

শুকনো কাশি হল শ্বাসযন্ত্রের প্রদাহ জনক একটি রোগ। এর সাথে তীব্র গলা ব্যথাও থাকতে পারে। বিশেষ করে ঠান্ডার মৌসুমে এর পাদুর্ভাব কিছুটা বেড়ে যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক শুকনো কাশি কেন হয় এ বিষয়ে বিস্তারিত-
  • ব্রংকাইটিস
  • নিউমোনিয়া
  • হাঁপানি সংক্রমণ
  • ফুসফুসের সংক্রমণ
  • ফুসফুস এর ধমনীর এমবোলিজম
  • ঋতুজনিত সমস্যা। ইত্যাদি কারণে শুকনো কাশি হতে পারে।

শেষ কথা

উপরের আলোচনা অনুযায়ী আপনি নিশ্চয়ই কাশি হলে করণীয় কি জানতে পেরেছেন।এই পর্বটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে সবাইকে জানার সুযোগ করে দেবেন।এই পর্বে আপনার যদি কোন মন্তব্য থাকে তবে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url